অনেকেই সন্তান জন্ম দেওয়ার ব্যপারে সমস্যায় ভোগেন। অর্থাৎ, প্রজনন ক্ষমতা কম। এটা হতে পারে শারীরিক বিভিন্ন দুর্বলতার কারণে। এগুলোকে যৌন সমস্যা মনে না করে দূর করার কথা ভাবুন। এগুলো দূর করা যায় স্বাভাবিক খাবারে কিছুটা পরিবর্তন এনেই। এখানে সাতটি খাবারের একটি তালিকা দেওয়া হল, যা আপনার প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। আলোচনার আগে নাম গুলো জেনে নেই। ঝিনুক, দুধ, আলমণ্ড বাদাম, মুরগী, ব্রাজিল নাট, ডিম এবং চা।
প্রথম যে খাবারের কথাটি উল্যেখ করব, তা বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে নেবে জানিনা। তবে এটা সী ফুড, যা ধর্মীয় দৃষ্টিতেও জায়েজ। তা হল ঝিনুক।
ঝিনুকে জিঙ্ক, লৌহ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়ামসহ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি১২-এর ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রয়েছে। তবে খাদ্য শক্তি কম রয়েছে। এক ডজন কাঁচা ঝিনুকে মাত্র ১১০ কিলোক্যালরী শক্তি সঞ্চিত আছে। কাঁচা ভক্ষণ করলেই সবচেয়ে বেশী খাদ্য উপযোগিতা পাওয়া যায়।
oঝিনুক -
ঝিনুকে জিঙ্ক, লৌহ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়ামসহ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি১২-এর ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান রয়েছে। তবে খাদ্য শক্তি কম রয়েছে। এক ডজন কাঁচা ঝিনুকে মাত্র ১১০ কিলোক্যালরী শক্তি সঞ্চিত আছে। কাঁচা ভক্ষণ করলেই সবচেয়ে বেশী খাদ্য উপযোগিতা পাওয়া যায়।
প্রাচীনকাল থেকেই ঝিনুক যৌন উদ্দীপনা বৃদ্ধিতে সহায়তাকারীর
প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচিত। জিঙ্ক নারী পুরুষ উভয়ের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একদল আমেরিকা এবং ইতালিয়ান গবেষকগণ বিশ্লষণ করে দেখিয়েছেন যে, ঝিনুকে
যথেষ্ট পরিমাণে এমিনো এসিড রয়েছে যা যৌন হরমোন সৃষ্টিতে সহায়কের ভূমিকা
পালন করতে পারে। উচ্চমানের জিঙ্কে টেস্টোস্টারোন রয়েছে। এর খোলশ ক্যালসিয়াম
কার্বোনেট বা চুনজাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরী।
কাঁচা, সিদ্ধ, ভেজে, রোস্ট
ইত্যাদি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। এছাড়াও, বিভিন্ন ধরণের পানীয়ে এর
ব্যবহার রয়েছে।
oতাজা দুধ,
স্কিম করা (চর্বি বা শর ওঠানো) নয়,
বরং তাজা দুধের সাথে থাকুন। গরুর দুধে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের হরমোনই রয়েছে।
স্কিম
করার সময় ইস্ট্রোজেন চর্বির সাথে বাদ পড়ে যায়, দুধের সাথে তখন শুধু পুরুষের
হরমোনটি থাকে। ১৮০০০ এর উপর মহিলাদের উপর চালানো একটি গবেষণায় দেখা গেছে, লো ফ্যাট
এবং জিরো ফ্যাট দুধের ব্যবহার তাদের ফার্টিলিটি (প্রজনন ক্ষমতা) কমিয়ে দিয়েছে।
যেখানে ফুল ফ্যাট বা তাজা দুধ ফার্টিলিটি বাড়ায়।
oকাজুবাদাম –
কাজুবাদাম ভিটামিন “ই” এর সমৃদ্ধ উৎস। আর ভিটামিন “ই” একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট
ভিটামিন, যাকে “ফার্টিলিটি ভিটামিন” ও বলা হয়ে থাকে। কারণ, এটি প্রজননস্বাস্থ্য
রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মহিলাদের শরীরে হরমোন উৎপাদনকারী চর্বিতে
দ্রবণীয় অন্যান্য ভিটামিন শোষণ করতে সাহায্য করে এই ভিটামিন “ই”। যেসব পুরুষ বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছেন, তাদেরকে
ভিটামিন “ই” দ্বারা চিকিৎসা করে শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধিতে কার্যকর ফলাফল পাওয়া
গেছে...
oমুরগীর মাংস -
মুরগীর মাংস নিয়াসিন(ভিটামিন B3)) এর একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা কিনা যৌন হরমোন
সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নারী পুরুষ উভয়ের দেহেই উর্বরতা সমস্যার সাথে নিয়াসিন ঘাটতি জড়িত। কিন্তু প্রতি ৩ আউন্সে ১০.৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন পাওয়া যায়, যা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ৭৫ শতাংশ বি৩ প্রদান করে।
নারী পুরুষ উভয়ের দেহেই উর্বরতা সমস্যার সাথে নিয়াসিন ঘাটতি জড়িত। কিন্তু প্রতি ৩ আউন্সে ১০.৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন পাওয়া যায়, যা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ৭৫ শতাংশ বি৩ প্রদান করে।
ব্রাজিলিয়ান বাদাম সেলেনিয়ামএর গুঁড়িপূর্ণ থাকে, যা একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট খনিজ। এটি ডিম্বানু এবং শুক্রাণুর মধ্যকার ক্রোমজোমকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
সাধারণত গর্ভাবস্থার
প্রথম দিকে গর্ভপাত এবং জন্মত্রুটি সমূহের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ক্রোমজোমই দায়ী হয়ে
থাকে। সেলেনিয়াম পুরুষের সুস্থ্য শুক্রাণু গঠণের জন্য অন্যতম একটি পুষ্টি উপাদান।
গবেষণায় দেখা গেছে, সেলেনিয়ামের ঘাটতির জন্য শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়।
oচা-
একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মার্কিন জার্নাল দ্বারা পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সোডা বা কফি ত্যাগ করে চা গ্রহণ করেছে, তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, চা এবং প্রজনন ক্ষমতার মধ্যে একটি যোগসুত্র হিসাবে হাইপোক্স্যান্থাইন (hypoxanthine) নামক জৈবরাসায়নিক যৌগ কাজ করে। আর চায়ের মধ্যে এটি বিদ্যমান। আর এই ফলিকুলার (follicular) তরলটি ডিম্বানু পরিষ্ফুটনের আগে পরিপক্কতা পেতে সাহায্য করে।
oডিম-
এটি সত্যি অবিশ্বাস্য মনে হবে, যখন জানবেন যে ডিম আপনাকে এমন পুষ্টি ও
দিচ্ছে, যা আপনার প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
শুধুমাত্র
একটি ডিম আপনার দৈনন্দিন চাহিদার খুব বড় একটা অংশ, তথা ১০ শতাংশ আয়রন ও জিঙ্ক
প্রদান করে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন “বি” এবং প্রাত্যহিক চাহিদা অনুযায়ী ভিটামিন “এ”
এর ১৬ শতাংশ প্রদান করে। আর ভিটামিন “এ” একটি চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যা প্রজনন
হরমোন পুনরোৎপাদনে সাহায্য করে।