Gardening লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Gardening লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

অধিব্রীহি

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, যে নামটি দেখছেন, অর্থাৎ অধিব্রীহি, নামটি ডক্টর আবেদ চৌধুরীর পঞ্চব্রীহি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নেয়া হয়েছে। তবে বিজ্ঞানী ধানের জাতের নাম দিয়েছেন, আমি পদ্ধতির নাম দিয়েছি। পঞ্চব্রীহি একবার লাগালে পাঁচবার ধান দেয়। আর অধিব্রীহি পদ্ধতি সমপরিমাণ জায়গায় ২ গুণ ধান দেয়।

কি! বিশ্বাস হচ্ছেনা! নতুন পাগলের আগমন!?

না ভাই, পাগল আমি বেশ পুরনো। তবে অধিব্রীহি পদ্ধতির বয়স মাত্র ২ বছর। আর এটা পাগলামি নয় ভাইজান, বিজ্ঞান। ধান তো এমনিতেই বেশি হবেনা! চাষ পদ্ধতির কারণে আপনি এমন পাবেন।

কেমন পাবেন? প্রতি শতাংশ জায়গায় সাধারণত ধান হয় গড়ে সবচেয়ে ভালো হলে ৩০ কেজি। অধিব্রীহি পদ্ধতিতে পাবেন ৬০ কেজি। ৪ বার ধান করতে পারবেন একই জায়গায়। তাতে আসবে ২৪০ কেজি। অর্থাৎ, ৬ মণ ধান।

পদ্ধতিটি কিন্তু একোয়াপনিক এর। তারমানে ধান চাষে আপনার খরচ প্রায় শূন্যের কাছাকাছি (সাধারণ চাষের তুলনায়) আর একোয়াপনিক হলো মাছ ও সব্জি চাষের একটা অর্গানিক পদ্ধতি, যেখানে স্বল্প জায়গায় অকল্পনীয় হারে বেশি মাছ উৎপাদিত হয়। তেলাপিয়ার একটা হিসাব যদি ধরি, তা সাধারণ পদ্ধতিতে এক শতাংশ পানিতে ২০০ কেজি করা সম্ভব। কিন্তু একোয়াপনিক সিস্টেমে সমপরিমাণ জায়গায় করা যাবে ৪০০০ কেজি। এবার, এই এতো মাছ চাষের জন্য একোয়াপনিক সিস্টেমে লাগবে উদ্ভিদ, তথা সব্জির চাষ। সেখানেই, আমরা করেছি ধান। আর এখানেই পদ্ধতিতে একটু পরিবর্ধন করে ধান করা যাবে ২ গুণ।





শতাংশ প্রতি ধান হবে ২৪০ কেজি বছরে। আর হবে শতভাগ অর্গানিক। যেমন ধান আজ থেকে শত বছর আগে ছিলো।



একোয়াপনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করতে চারা থেকে শুরু করে কোনো চাষই লাগবে না। এছাড়াও নিড়ানো, সেচ কিছুই লাগবে না। তাহলে কেমন পদ্ধতি বলুনতো! আর আপনি এভাবেই হতে পারবেন স্যুটেড বুটেড একজন কৃষক।





আর নিচের এই ছবিটি হলো অধিব্রীহি সিস্টেমের। ছবিটি সাজানো।


অধিব্রীহি। অধিক ধান ফলানোর একটি সিস্টেম মাত্র।

কেউ যদি অতি খাটো কোনো ধান গাছের আবিষ্কার করেন, তাহলে এই অধিব্রীহি পদ্ধতিতে ধান চাষ আমাদের জন্য আশির্বাদ স্বরুপ দেখা দেবে, ইনশাআল্লাহ।

বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৮

বায়োফিল্টার

বায়োফিল্টার এমন একটা ফিল্টারিং, যেখানে কোন বিষাক্ত বর্জ্যকে প্রাকৃতিক কায়দায় নির্বিষ করা হয়।
যদিওবা এই পদ্ধতি কারখানার বর্জ্য বা পৌর-বর্জ্য সহ, বিভিন্ন বিষাক্ত বর্জ্যকে নির্বিষ করার কাজে হয়। তবে এখন আমরা আলোচনা করবো RAS এর এমোনিয়া (NH3) ফিল্টারিং এ বায়োফিল্টারিং নিয়ে। তবে খুব সংক্ষিপ্ত।

খুব সোজা জিনিষটা। কিভাবে? হ্যা বলছি।
পৃথিবীতে যত রকম বিষাক্ততা তৈরি হয়, দুর্ঘটনাক্রমে, বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বা নিত্যপ্রয়োজনে, যেভাবেই হোক, সেই বিষাক্ত বর্জ্যকে বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া বিভিন্নভাবে সেগুলোকে ভেঙ্গে ফেলে। ব্যাক্টেরিয়া সেগুলো থেকে আহার গ্রহণ করে, বংশ বৃদ্ধি করে। আর খাবার গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সেখানে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠিত হয়। সেই বিক্রিয়ার মাধ্যমে  যে জৈবিক সংশ্লেষণ ঘটে। তাতে বিষাক্ত অনু ভেঙ্গে অবিষাক্ত একাধিক অনু তৈরি হয়। এভাবে সৃষ্টিকর্তা তাঁর সৃষ্টিকে টিকিয়ে রাখেন।

যাহোক RAS এ মাছ টিকিয়ে বা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এমোনিয়া দুর করতেই হবে। কারণ মাছের বর্জ্য থেকে প্রচুর এমোনিয়া তৈরি হয়। আর এটি পানিতে দ্রবণীয় জীবননাশী নাইট্রোজেন বিষ। এই এমোনিয়া (NH3) কে নাইট্রোসোমোনাস নামক ব্যাক্টেরিয়া অক্সিডাইজড করে নাইট্রাইট (NO2-) এ পরিণত করে। এটাও কিন্তু জলজ প্রাণীর জন্য মারাত্তক বিষাক্ত। এবার? হ্যা, এরপর আছে আরেক টিম। নাইট্রোব্যাক্টার নামক ব্যাক্টেরিয়া। এরা আরেকটু অক্সিডাইজড করে নাইট্রেট (NO3) এ পরিণত করে। এখানে একটি গ্রাফ দেখুন-


আর নাইট্রেট  (>২০০মিলিগ্রাম/লিটার) মাত্রা পর্যন্ত  RAS এর জন্য ক্ষতিকারক নয়। হয়ে গেলো।

RAS এ বায়োফিল্টারিং এর জন্য কিভাবে কি করবেন?
নাইট্রোসোমোনাস এবং নাইট্রোব্যাক্টার এর জন্য বাড়ি করে দিবেন। 😊
রস করছি না। ব্যাক্টেরিয়াদের জন্য কলোনি করার ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে এই ব্যাক্টেরিয়া সমূহ বসবাস সহ বিস্তার লাভ করবে। এমোনিয়া সমৃদ্ধ পানি যখন এই কলোনি সমূহের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে, তখন উপরোল্লেখিত  প্রক্রিয়া সমূহ সংগঠিত হতে থাকবে। এবং ...


ব্যাক্টেরিয়ার বাড়ি তৈরিতে যে উপাদান ব্যবহৃত হয়, তার নাম বায়োমিডিয়া
এখানে DIY বায়োমিডিয়া দেখতে পাচ্ছেন। এমনি কোন জিনিষ হলেই হবে। বিভিন্ন দেশে রেডিমেড বায়োমিডিয়া পাওয়া গেলেও আমাদের দেশে পাওয়া যায়নি।


আমাদের ব্যবহৃত বায়োমিডিয়া।

তৈরি করুন। কাজে লাগান। কাজ দেবে। অন্যান্য হেল্প এর জন্য যোগাযোগ করতে হলে ...
কমেন্ট করুন।
ধন্যবাদ।

রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭

অ্যাকোয়াপনিক (একোয়াপনিক) Aquaponic


আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
অ্যাকোয়াপনিক/একোয়াপনিক (Aquaponic) একটি ইংরেজী শব্দ। যদিওবা এটি একক শব্দ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, আসলে কিন্তু দুটি আলাদা শব্দ থেকে এসেছে। Aquaculture এবং Hydroponic দুটি আলাদা পদ্ধতি। একোয়াকালচার হলো পানিতে জন্মে এমন প্রাণীসমূহ  চৌবাচ্চা বা কোন বাক্সে পানি রেখে পোষা বা চাষ করা। সোজা কথা হলো একোরিয়াম। তবে চাষের ক্ষেত্রে তো আর এমন কাচের আধার ব্যবহৃত হয়না। আর হাইড্রোপনিক হলো পানিতে সব্জি জাতিয় ফসল ফলানো সিস্টেম। আর এই দুই সিস্টেমের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে একোয়াপনিক সিস্টেম।

একোয়াকালচার

হাইড্রোপনিকস


একোয়াকালচার
হাইড্রোপনিক
জায়গা স্বল্পতার জন্য বা আধুনিক সুবিধার জন্য মানুষ মাছের চাহিদা মেটাতে এই একোয়াকালচার সিস্টেম চালু করে। অল্প স্বল্প জমিতে (যেখানে পুকুর করা সম্ভব নয়) বা বাড়ির ছাদে চৌবাচ্চা তৈরি করে মাছ চাষ শুরু করে। অনেকগুলো সুবিধার সাথে বড় একটি অসুবিধা হলো পানি নষ্ট হয়ে যাওয়া। একোরিয়ামের পানি যদি নিয়মিত না পাল্টানো হয়, তাহলে মাছের বিষ্টা এবং খাবারের উচ্ছিষ্ট জমে পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে মাছ মারা যায়।...

«
»
«
»
«
»
«
»
«
একই কারণে ছাদে বা ঘরোয়া পরিবেশে মাটি
ছাড়া শুধু পানি ব্যবহার করে সব্জি চাষ করেও
অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। যেখানে
মাটি থেকে বিভিন্ন সংক্রমণের পরিমাণ অনেক
কম থাকলেও পানিতে উদ্ভিদের খাদ্য হিসাবে
রাসায়নিক সার মেশাতে হয়। ফলন অনেক
ভালো হলেও পুরোপুরি অর্গানিক না হওয়ায়
মানুষের মনে প্রশ্ন থেকেই যায়।


  
একোয়াকাচা হাড্রোনি             


ঠিক একারণে, একোয়াকালচার আর হাইড্রোপনিক দুই সিস্টেমকে একত্রিকরণ করা হয়, যা উপরের খুবই সাধারণ চার্ট হতে খুব সহজেই বোঝা যায়।

একোয়াপনিক 

একোরিয়াম বা খাঁচায় মাছ চাষ করলে জায়গা স্বল্পতা ও মাটির সংস্পর্শ না থাকায় মাছের উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য জমে খুব স্বল্প সময়েই বিষাক্ত এমোনিয়া তৈরি করে। এর ফলে মাছ মারা যায়। তাই নিয়মিত পানি বদলানো খুবই জরুরী। এদিকে হাইড্রোপনিক সিস্টেমের কথা তো বলেইছি। যেখানে কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হয়। এখন, একোয়াকালচার আর হাইড্রোপনিক একত্রিত করেই হয়ে গেলো সকল সমস্যার সমাধান। আর নতুন এই সিস্টেমের নামই হলো একোয়াপনিক।

একোয়াপনিক 

একোয়াপনিক সিস্টেমে সামান্য খরচেই মাছ এবং সব্জি চাষ করা যায়। শুধু জায়গা স্বল্পতাই নয়, যারা কৃষি কাজে অভ্যস্ত নয়, বা মাঠে কাজ করতে পারেন না, তাদের জন্য এই পদ্ধতিতে মাছ এবং সব্জি চাষ করে পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করাও সম্ভব। এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র মাছকে খাবার দিতে হয়, আর মাছের বর্জ্যসহ পানি সব্জিতে দিতে হয়। মাছের জন্য বিষাক্ত এমোনিয়া ব্যক্টেরিয়া দ্বারা ভেঙ্গে উদ্ভিদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরি করে। ফলে সব্জিতে কোন ধরণের সারই প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়েনা। তার মানে, একোয়াপনিক সিস্টেমের চাষাবাদ বিভিন্ন দিক দিয়ে সাশ্রয়ী, এবং অরগানিক হবার কারণে ভীষণ উপকারীও বটে।

একোয়াপনিক 

আজ একোয়াপনিক সিস্টেম সম্বন্ধে জানানো হলো। সামনে বাংলাদেশে খুবই সহজে কিভাবে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা যায়, তার আলোচনা হবে।

সবার সুস্থতা কামনা করে সামনের পোষ্টের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপাতত বিদায় নিচ্ছি।

রবিবার, ২২ মার্চ, ২০১৫

তুঁত ফল

তুঁত (ইংরেজিMulberry) গাছের দুই প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম যথাক্রমে Morus nigraএবংMorus rubra। তুঁত গাছের পাতা রেশম গুটি পোকার প্রিয় খাদ্য। এর ফল রসাল এবং সুস্বাদু হলেও বাংলাদেশে ফলের জন্য চাষ করা হয় না। তবে আফগানিস্তান, উত্তর ও দক্ষিণ ভারত প্রভৃতি স্থানে তুঁত ফল হিসাবে চাষ করা হয়।



তুঁত গাছ পাতা ঝরা প্রকৃতির ছোট ধরনের বৃক্ষ। পাতা ডিম্বাকার, খসখসে, পাতার প্রান্তভাগ করাতের মত খাঁজ কাটা এবং অগ্রভাগ সূঁচাল। 


 তুঁত একটি গুচ্ছ ফল, অনেকগুলো ক্ষুদ্র ফল মিলে একটি ফল তৈরি করে, ফল বেরী জাতীয়। বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মৌসুমে তুঁত গাছে প্রচুর ফুল আসে এবং ফল পাকে মার্চ-এপ্রিলে।


কাঁচা ফলের রং সবুজ, আধাপাকা ফল হালকা পিংক, কিন্তু পাকলে টকটকে লাল এবং সম্পূর্ণ পাকলে কালচে রং ধারণ করে। যখন গাছে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা পাকা ফল থাকে, তখন তা এক দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য তৈরি করে।


এদেশে সাধারণত শাখা কলম বা শীতকালে ছাঁটাই করা ডাল মাটিতে পুঁতে নতুন গাছ তৈরি করা হয়। তবে বীজ দিয়েও চারা তৈরি করা যায়। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি তুঁত চাষ করা হয় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে
তুতেঁর লালচে কালো ফল খুবই রসালো, নরম, মিষ্টি টক ও সুস্বাদু। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য পাকা তুঁত ফল উপকারী। এ ছাড়া পাকা ফলের টক-মিষ্টি রস বায়ু ও পিত্তনাশক, দাহনাশক, কফনাশক ও জ্বরনাশক। তুঁত গাছের ছাল ও শিকড়ের রস কৃমিনাশক। পাকা লালচে কালো বা কালচে ফলের প্রজাতি। এদের গাছও তুলনামুলকভাবে খাটো। Morus alba প্রজাতির তুঁত ফল সাদা বর্ণের, পাকলে হয় হালকা গোলাপী সাদা। এ ফল টক নয়, স্বাদে খুব মিষ্টি ও সরালো। মূলত এ প্রজাতির তুঁত ফলের জন্য চাষ করা হয়। পাকা তুঁত ফলের রস থেকে জ্যাম, জেলি ও স্কোয়াশ বা পানীয় তৈরি করা যায়।

শনিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৫


ছবিটা দেখুন তো, কি মনে হয়?


জানি, এক বাটি ডিম ভাঁজি ছাড়া কি আর বোঝা যাবে।

আসুন দেখি, কাহিনী টা বলি।
একটা ডিম ফ্রাই করা হলো। তার অর্ধেকটা নাস্তার জন্য রেখে বাকি অর্ধেক আলাদা করে ফ্রীজে রেখে দেয়া হলো। এখন নাস্তার অংশ থেকে অর্ধেকটা দিয়ে আটজনে চাপাতি খেল। তার মানে মোট অংশের এক চতুর্থাংশ নিয়ে আসা হলো অফিসে আমাদের জন্য। আর আমরা এগারো জনে চাপাতি খেলাম। (আমি দুইবার)
জানি বিশ্বাস হতে চাইবে না। শিরোনাম দেখে একটু ধারণা হয়ে থাকতে পারে। তবে এই কথা কাউকে শুনাতে গেলে শুনতে হয়েছে অন্য আরেকটি গল্প।
এক মহিলার চিৎকার শুনে আরেকজন এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে? মহিলা বলল, তার ভাষায় –“ আর শুনিসনে লো বু। আগের হাটে (৫/৬দিন আগে) এক ছটাক ত্যাল আনিছে। সারা সপ্তা রান্দিছি, বাড়ির সগলি গায় মাথায় মাখে বারেন্দার কুনায় রাখে গিছি। কোন ভরাপড়া আসে গবগব করে ঢালে নিয়ে তো গেছেই, এরপর আবার দ্যাখ খানা পয্যন্ত বায়ে গেছে।“
জানি, যাদের ধারণা নেই, তারা এমন কোন উদাহরণ দিয়ে আমার গল্পটাকে অবাস্তব গল্প হিসাবে দাঁড় করাবে। যা হোক, বাস্তব প্রমাণ দিয়ে দেই, আর যারা উটপাখির ডিম দেখেননি, তাদের জন্য একটা বোনাস সুযোগ। বাস্তবে না হোক, ছবিতে তো।


মাঝখানের ব্যাক্তিটি ডিমটি এনেছিলেন। আর আমি তো ছবি তোলার জন্য সদা প্রস্তত। পাশের দুজন বুঝতে পেরে দ্রুত পোজ নিয়ে নিলেন। ব্যস ...
এতোবড় ডিম আমিও এই প্রথম দেখলাম। বুঝলাম, উটপাখির ডিম। ডিমটির ওজন ছিল ২.৩ কেজি।




ডিম যিনি এনেছেন, তারও একটা ডিম হাতে ছবি নিলাম।
ডিমটি প্রথমে তারা সাধারণ কিচেন নাইফ দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করেন। না পেরে বড় চামচ দিয়ে। ব্যর্থ হয়ে শেষ মেশ হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গেছিলেন।

এবার উটপাখির ছবি দেখুন।


সাইজ বোঝাতে উটপাখির প্রতিযোগিতার একটি ছবিও দিলাম।


ছবিদুটি নেট থেকে নেয়া হয়েছে।




জনাব ইসমাইল হোসেন সাহেব, ছবির জন্য পোজ দিলেন।

বাস্তবে অনেক সাধারণ জিনিষই আমরা দেখতে পাইনা। যারা আগে দেখেননি, তারা দেখলেই আমি ধন্য।
ধন্যবাদ... ওই ভাইকে, নামটা মনে আসছে না। তার বদৌলতে এটি শুধু দেখাই নয়, খাওয়াও হলো। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে তার সকল নিয়ামাত দেখার, উপভোগ করার তাউফিক দিন। আমীন...

বৃহস্পতিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৫

মধুকরের আসা যাওয়া...

সুন্দর দৃশ্য দেখলে সবারই মন জুড়িয়ে যায়, ভাল লাগে। আর ক্যামেরাবন্দী করতে মন চায়। আর ডিজিটাল ক্যামেরা আসাতে মনের আশা পূরণ কতই না সহজ হয়েছে। আর স্মার্টফোন এসে শুধু এই আশা পূরণই নয়, দৃশ্যগুলো কাছে দূরে তথা বিশ্বব্যাপী সবার সামনে তুলে ধরা হাজার গুন সহজ করে দিয়েছে।
তেমনি একটি ছোট্ট প্রয়াস এটি...
নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদের সামনে ফুলগুলো দেখে ছবি তোলার জন্য মনটা আঁকুপাঁকু করতে লাগল।



তুলে ফেললাম বেশ কয়েকটা ছবি।


ফুলের ছবি তুলতে গিয়ে দেখি মধুকর এসেছে। যেন পোজ নিল ফুলে বসবার, মধু খাবার এবং ফুল ছেড়ে চলে যাবার।


এভাবে ফ্রেমবন্দী করতে পারব ভাবিনি কখনো। 


সত্যিই খুশি খুশি লাগছে।


মৌমাছিটা চলে গেল, কিন্তু ও কি জানে, সে ইতিহাস হয়ে বেঁচে থাকবে ব্লগের পাতায়! 



শেষ মেশ ফুলটার একটা ক্লোজআপ শর্ট নিলাম।
ফুলটার পরিচয় কি জানিনা। তবে জানার আগ্রহ যে নেই, তা কিন্তু নয়। তবে জানতে পারলে আপনাদেরকেও জানাব ইনশা আল্লাহ্‌। এই ব্লগের পাতায়।

শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৩

বর্নালি জুম চাষ (Bornali zum)

বর্নালি জুম। কেমন যেন একটা লাগছে। জুম চাষের কথা শোনেনি এমন ক'জন আছে? তবে এটি একটু ভিন্ন। জুম চাষ করা হয় পাহাড়ে। আর এটি করতে হবে অভাবে।

অভাবে! এটি আবার কেমন কথা! হ্যাঁ, অভাবে, জায়গার অভাবে। যাদের নিজস্ব প্রচুর জায়গা নেই। শহরের বাড়িতে হয়ত ছাদে একটু জায়গা। তারাই, সামান্য জায়গা থেকে সহজে প্রয়োজনীয় শাক সব্জির চাহিদা মেটাতে পারেন এই বর্নালি জুম পদ্ধতিতে।

বর্নালি জুম কেন করবেন? বাজারে আমরা যে সকল শাক সব্জি পাই, তাতে প্রিজারভেটিভ, কীটনাশক প্রভৃতির ভয় থাকে। দামের কথা রেখেই দিলাম। এছাড়াও, নিজের জন্মানো শাক সব্জি খাবার মজাই আলাদা। এর একটা আলাদা আত্মতৃপ্তি আছে।

হ্যাঁ, চাষ করতে হলে তো অবশ্যই জায়গা লাগবে। নিজের চাহিদা মেটাতে যে জায়গার দরকার, তা আপনার আয়ত্বের মধ্যে থাকতে হবে। কিন্তু আয়ত্বের মধ্যে সবার তো জায়গা থাকে না। কারো এমনিতেই জায়গার অভাব, কারো জায়গা আছে, কিন্তু শহরে নেই। তবে কি নিজের হাতের শাক সব্জি খেতে পারবে না?

হ্যাঁ, কেন নয়? বাড়িতে স্বল্প পরিমাণ যতটুকু জায়গা আছে, অথবা ছাদে আমরা চাহিদা মত শাক, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, লাল শাক, স্ট্রবেরি, টমেটো ইত্যাদি সবই চাষ করতে পারি। আর যে পদ্ধতিতে এটা করতে হবে, তার নামই হল বর্নালি জুম পদ্ধতি।

বর্নালি জুম-
জুম চাষের কথা আমরা সবাই জানি, পাহাড়ের অধিবাসীরা পাহাড়ের ঢালু জমিতে একই জায়গায় কয়েক প্রকার ফসল ফলায়, যার নাম জুম চাষ। আমাদের আজকের বর্নালি জুম ও তেমনি একই জায়গায় কয়েক প্রকার ফসল ফলানোর পথ বলবে।

আপনারা সকলেই টবে চাষ সম্বন্ধে জানেন। অনেকের বাড়িতে বা ছাদে ফলের গাছ আছে। কমছে কম ফুলের টব তো আছেই। তবে এটি একটু আলাদা। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ৫ টি টব, (বেশিও করা যায়), যা একটির উপর একটি সাজানো। প্রত্যেক টবেই চাষ করা যায়।



এবার আসুন, কেমন টব ব্যবহার করতে হবে, সেকথায় আসা যাক। বর্নালি জুমে আসলে বিশেষ ধরণের টব ব্যবহার করা হয়েছে। পাঁচটি টবই ভিন্ন সাইজের। তবে গড়ন একই। প্রথম টব, যেটি সবচেয়ে বড়, তার ব্যস ৩ ফিট। উপরে ৩ ফিট, নিচে ২ ফিট। উচ্চতা ১ ফুট। আর একদম উপরের টবটির ব্যস ১.৫ ফিট। সবগুলোর উচ্চতাই ১ ফুট।
এখানে আবার ৪টি ১ ফুট উচ্চতা এবং ১ ফুট ব্যস বিশিষ্ট পাইপ ব্যবহার করতে হবে। যেগুলো টবগুলোর মাঝখানে বসাতে হবে। এতে আমাদের মাটির পরিমাণ কম লাগবে। তবে উপরের, অর্থ্যাৎ ৪ নম্বর পাইপের মাথা বন্ধ রাখতে হবে। কারণ, উপরের টবটি ছোট, তাই এটিতে ফাঁকা রাখা লাগবেনা।


পাইপ

টবের মধ্যভাগে পাইপটি রাখতে হবে

এভাবে একটার উপর একটা পাইপ রাখাতে মাঝখানে অনেক জায়গা ফাঁকা থাকবে।
এতে করে মাটি কম লাগবে। ছাদের উপর ওজন বাড়বে না।

তবে, উপরের পাইপটি একমুখ বন্ধ অথবা কিছু দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। কারণ, উপরের টবের মাঝে খালি রাখার দরকার নেই।

আমাদের জুম টব প্রস্তুত হয়ে গেল। তবে হ্যাঁ, প্রথমে বড় টবটিকে পছন্দ মত জায়গায় বসিয়ে মাঝখানে পাইপ বসাতে হবে। এরপর দোআঁশ মাটি দিয়ে টবটি এক ইঞ্চি খালি রেখে পূর্ণ করতে হবে। এবার দ্বিতীয় টব ও পাইপটিও একই ভাবে বসাতে হবে। চতুর্থ পাইপটির উপরিভাগ বন্ধ করার কথা মনে রাখতে হবে। আর একমুখ বন্ধ পাইপ হলে তো চিন্তাই নেই। পঞ্চম টবটি মাটি দিয়ে ভরার পর জুম প্রস্তুত।

কি কি চাষ করা সম্ভব? গুল্ম জাতিয় সকল প্রকার শাক বা সব্জিই উৎপাদন করা সম্ভব। একটি জুমে আপনি একই প্রকার চাষ করতে পারেন। তবে যদি এক এক অংশে আলাদা আলাদা ফসল ফলান, যেমন নিচে স্ট্রবেরি, এরপর লালশাক, পালংশাক, পুদিনা এমনি করে চাষ করেন, তাহলে জুমটি বর্নিল হয়ে একটা সৌন্দর্যের বস্তু হয়ে দাঁড়াবে। আর আসলে এজন্যেই এর নামকরণ করা হয়েছে বর্নালি জুম চাষ।

তবে দেরি কেন? আজই শুরু করুন। এবং নিজের উৎপাদিত শাক সব্জি, নো কীটনাশক, নো প্রিজারভেটিভ।
দাওয়াত দিলে খারাপ হয়না। তবে, সৃষ্টিকর্তার জন্য শুকরিয়া আদায় করবেন, যিনি এ সকল জ্ঞান মানুষ কে দিয়েছেন।



~